স্মৃতি শেখর মিত্রর কবিতা--
গঙ্গা
অপূর্ব এক সমন্বয়ে
আমরা আমাদের পূর্বসূরী ও উত্তরসূরী
সকলে মিলে একবার না একবার
গঙ্গাতটবর্তী শহরগুলি দেখতে যাই
যেখানে মানবসভ্যতা হাজার বছর ধরে অক্ষত
আছে। এই নদী পুন্যতোয়া গঙ্গানদী
বয়ে চলেছে আপন ছন্দে মানুষকে ভালবেসে
তাদের সুখ দুঃখের অংশীদার হয়ে।
এ নদীতে পুন্যস্নানে ধৌত হয় সমস্ত পাপ
আত্মার সমস্ত কলুষ, অপার শান্তি
ফিরে আসে,শুদ্ধ হয় চিত্তের অশুদ্ধি।
সুন্দর হয়ে ধরা দেয় যা কিছু অসুন্দর।
পরিপূর্ণ হয় মানুষের সব আশা আকাঙ্খা।
দূর হয়ে যায় সমস্ত ক্লেদ ও গ্লানি।
লক্ষ কোটি মানুষের বিশ্বাস নিয়ে
এ নদী আজও বয়ে চলেছে চির বিদায়ের মুহূর্তে যাঁর দু ফোঁটা বারি সিঞ্চনে
পরম আত্মীয়ের মতো মুক্তি ঘটায়
মানব আত্মার।
২
পরিযায়ী জীবন
প্রতিটি মুহূর্ত এসে দিয়ে যায় নাড়া
ভুলিয়ে দেয় জীবনের গান।
শব্দেরা উথাল পাথাল আজ
ভালো লাগে না আর এই পরবাস।
সঙ্কীর্ণ হৃদয় নিয়ে বসে থাকা
কবে ফিরে পাবো সেই মাটির সুবাস
যেখানে শিলাবতী নদীতীরে ছিল আমাদের বাস।
ক্লেদ আর ক্লেশে আজ নির্বাসন
খেই হারা সুরহারা ক্লান্ত হৃদয়। ভালো লাগে না
পরিযায়ী জীবন সুদূর পরবাসে।
৩
কলম
কবির কলমে ঝরে পড়ে কত কথা
যেমন শীতের শেষে শুরু হয় গাছেদের
পাতা ঝরানোর পালা, সমস্ত গাছকে নগ্ন করে
দেয় শীতের কাঠিন্যে।
তেমনি হৃদয়ের মাঝে জমে থাকা সমস্ত
দুঃখ সুখের গাথা লেখা হয়
কলমের আঁচড়ে।
শীতের শেষে কচিপাতাদের উন্মেষে
শুরু হয় গাছেদের শরীর
ঢাকার দিন।
কবিদের মনেও ধরা দেয় ভালবাসার ছোঁয়া
বসন্তের আগমনে।
নতুন করে লেখা হয় প্রেমের কবিতা।
*স্মৃতি শেখর মিত্র
মুরগাশোল, আসানসোল (পশ্চিম বর্ধমান)
No comments:
Post a Comment