Tuesday 5 October 2021

রূপালী মুখোপাধ্যায়ের কবিতা-- ১ মাতৃস্নেহ ২ ছোটনদীর আত্মকথা


রূপালী মুখোপাধ্যায়ের কবিতা--  

মাতৃস্নেহ

 

দিন ফুরলো সাঁঝের বেলা ফিরছে পাখি নীড়ে 

সারাদিনে ক্লান্ত ওরা উড়ছে ধীরে ধীরে।

কাল বোশেখী হঠাৎ শুরু বুক করে ধড়ফড় 

প্রবল  ঝড়ে পড়বে ভেঙে ওদের বাসা ঘর।

মনের জোরে উড়তে থাকে বাসায় আছে ছানা 

ঝড়ের সাথে পাল্লা দিয়ে পারছে না আর ডানা।

শেষকালেতে পৌঁছে দেখে উল্টে গেছে গাছ

বাসা ভাঙার আর্তনাদে করছে ভূতের নাচ।

যতই বিপদ আসুক তোরা কেউ হবি না বার 

ছানাগুলো কাঁদছে সবাই করবে কী এবার ?

আর্তস্বরে  মায়ের ডাক শুনতে পেলো ছানা 

বহু কষ্টে বেরিয়ে এসে দেখালো মুখখানা ।

বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে শ্রাবণ ধারা বয় 

পেটের জন্য তাদের ছেড়ে বাইরে যেতে হয়।

 

ছোটনদীর আত্মকথা 

 

ছোট্ট নদীর আত্মকথা বলছি তোমায় শোন 

সেই নদীটির ভালোবাসা ভুলবোনা কক্ষনো।

ছোট্টনদী ছিলো নাতো ছিলো বিশালাকায় 

আবর্জনা ফেলে সেটা ছোট্ট হয়ে যায়।

একসময়ে বইতো নদী ছাপিয়ে যেতো কূলে 

উথাল পাথাল ঢেউ এর কথা কেমনে যাই ভুলে।

নদীর ধারে কাশের বনে বসতো  যদি কেউ 

কেমন করে ভুলবে তারা পাগল করা ঢেউ ? 

ঢেউগুলো সব বইতো তখন নানান ছন্দ সুরে 

গাঁয়ের লোকে শুনতো সে সুর যতই থাকুক দূরে।

চাষের কাজে লাগতো তখন ওই নদীরই জল 

গাঁয়ের চাষীর ছিলো তখন নদীটি সম্বল।

সকাল হলে কলকলিয়ে ছন্দ কতই তুলতো 

গাঁয়ের লোকও মুগ্ধ হয়ে সেই ছন্দ শুনতো।

এই নদীটি জীর্ণ এখন দেখায় বক্র রেখা

দূরের থেকে নদীটিকে যায় না তো আর দেখা ।

গাঁয়ের বুকের মধ্যে দিয়ে তিরতিরিয়ে বয় 

আমার গাঁয়ের ছোট্ট নদী আমাদেরই রয়।

 

No comments:

Post a Comment