Thursday, 7 October 2021

সম্পাদকীয়--




সম্পাদকীয়--
 

চলমান জীবনের নিয়ম সৃষ্টির বাঁধনে বাঁধা। সাহিত্য মানুষের সুখ-দুঃখ ভাব ভাবনা স্মৃতি স্বপ্ন সবকিছু মিলিয়ে সৃষ্ট হয়। আর এ সব কিছুর মাঝে থেকে যায় প্রকৃতির লীলাখেলা। আমাদের সাহিত্য বস্তুত আমাদের মনের পরিব্যাপ্তি, ঘটনা ক্রমের বিন্যাস, জীবনধারার আলেখ। 

আমাদের প্রকাশ, কথোপকথন, পত্রালাপ, প্রেমালাপ সবকিছুই উঠে আসতে পারে সাহিত্যের মাধ্যমে। সাহিত্য ছাড়া জীবনকে কল্পনা করা যায় না। প্রত্যেকটি মানুষের ক্রমবিন্যাসের ওপর মানসিক পরিবর্তন যেমন ঘটে থাকে তেমনি তাদের ভাবনার অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে সাহিত্য ক্রমশ  উন্নত এক সোপানে এসে দাঁড়ায়। প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যেই সাহিত্যের ছোঁয়া থেকে যায়, কারো কারো এই সাহিত্যের ভাব ভাবনা নিজেদের মনের মধ্যেই রাখা থাকে। তার প্রকাশ শুধুমাত্র সামান্য কিছু ব্যক্তিগত লেখা ও বার্তালাপের মাধ্যমে সীমাবদ্ধ থেকে যায়। এই ভাবনাগুলি আবার সাহিত্যিক লেখক কবিরা যখন সযত্নে কলমে কাগজের মাধ্যমে তুলে ধরেন তখন সে সাহিত্য লিখিত রূপ নিয়ে সর্বসমক্ষে প্রকাশিত হয়। 

সাহিত্য সৃজনের বিশেষ কিছু দিক আছে, শুধু মাত্র মনের মধ্যে ভাষার পোষণ থাকলেই সাহিত্যের বিকাশ সম্ভবপর নয়। বিকাশ বা প্রকাশ এ সবের মধ্যে দিয়েই সাহিত্যিক বা লেখক কবিরা নিজেদের পরিচিতি পান। বিশ্বসাহিত্যে যেমন অগণিত ভাষার প্রকাশ, তেমনি আমাদের ভারতীয় ভাষা সাহিত্যের মধ্যে বাংলা সাহিত্যের দৃষ্টি মূল্যায়নে এর স্থান অনেকটাই ঊর্ধ্বে। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস প্রাচীনতম ইতিহাস। এই বাংলাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখে গেছেন তাঁর অজস্র সহস্ত্র ভাব প্রকাশ। বিশ্বকবির সূত্র ধরে বাংলা ভাষা সমস্ত পৃথিবীতে  স্মরণীয়-বরণীয়। এ দিক দিয়ে আমরা বাংলা ভাষাকে নিয়ে গর্ব করার অবকাশ পাই। বর্তমান সাহিত্যচর্চা কেবলমাত্র কাগজে কলমেই থেমে নেই--এক অন্তর্জাল বিশ্বপরিমণ্ডলে তা ব্যাপ্ত ও সৃজিত। আজকাল অনায়াসেই আমরা আমাদের নিজেদের মনোভাব, পরস্পর ভাবনার বিনিময় অন্তর্জাল পরিবেশে চালিয়ে যেতে পারি। আজ আর  চিঠি লিখে সময়ের কালক্ষেপ করতে হয় না, মুহূর্তে দুরভাষ আমাদের দর্শন ও বক্তব্যকে সর্বসমক্ষে পৌঁছে দিতে পারে।

প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে সাহিত্যের ছোঁয়া লাগা থাকে। সবার মধ্যেই ভাবনার স্বয়ংক্রিয় শারীরিক ও মানসিক অবলম্বন রাখা থাকে, জীবনের কিছু কিছু মুহূর্ত সবাই কবি হয়ে যেতে পারে। ভাব ভাবনা প্রকাশের মাধ্যমে চাইলে সে নিজেকে সাহিত্যিক হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারে। তবে সাহিত্য বস্তুত মনের খোরাক, এখানে অর্থ ভাবনাকে ঢুকিয়ে দেওয়া যায় না। এখানে মানসিক তৃপ্তি কথাটাই বড় কথা। সাহিত্যিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার একটা মানসিকতা মনের মধ্যে সর্বদা কাজ করে কিন্তু সবাই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। এ জন্য ধৈর্য ও অনুশীলন বিশেষ প্রয়োজন।

যাই হোক, এবার আমাদের নিজস্ব সাহিত্যচর্চায় ফিরে আসি। আমাদের সাহিত্য চর্চা সীমিত, আমরা অনেকে সাহিত্য চর্চায় মনোনিবেশ করার চেষ্টা করি। অনেকটা সময় কাটাবার জন্য অনেকে সাহিত্যিক হতে চান। পারপার্শ্বিক দুঃখকষ্টকে ভুলে থাকার জন্যেও অনেকে সাহিত্যকে দিনচর্চার বিষয় বলে ভেবে নেন।  

আমাদের বর্তমান ব্লগ ও ই-পত্রিকা, স্ব-বর্ণ শারদীয়া সংখ্যা হিসাবে প্রকাশিত হচ্ছে। আমাদের নিয়মিত প্রকাশিত পত্রিকা স্বরধ্বনি ও বর্ণালোকের এটি একটি মিলিত সংস্করণ বলা যেতে পারে। বর্তমান সংখ্যায় কবিতা ও গল্প দুটিই স্থান পেয়েছে। লেখা প্রকাশের ব্যাপারে বলে রাখি --আমাদের পত্রিকায় লেখার বা লেখকের গুন মানের ভিত্তিতে আগে পরে পোস্টিংয়ের কিছু ব্যাপার নেই। বরং লেখা পাঠাবার তারিখের ভিত্তিতে আগে পরের পোস্টিং সিস্টেম কাজে লাগানো হয়েছে। 

সর্বোপরি আমাদের ত্রূটি বিচ্যুতির অভাব নেই জানি। আর এ জন্যেই সমস্ত লেখক পাঠকদের কাছে আমাদের অনুরোধ, আপনারা আমাদের পত্রিকা পড়ুন। আপনাদের নিজস্ব মতামত ও নিরপেক্ষ দিকদর্শনে আমরা বিশেষ আগ্রহী। ধন্যবাদান্তে--তাপসকিরণ রায়, সম্পাদক, স্ব-বর্ণ।   

 

সহঃসম্পাদককের কলমে:

প্রতি বছরের মত আবার একটা নতুন শারদবর্ষ এসে হাজির। এর আগমন বার্তা ধ্বনি তো হয় আকাশে বাতাসে অনেক আগে থেকেই। পথ চলতে চলতে মাঠে ঘটে তাকালেই চোখে পরে যায় রাশি রাশি কাশ ফুলের মেলা। আকাশের দিকে তাকালেই দেখা মেলে নীল আকাশের নিচে সাদা পেজা তুলোর মত স্তুপ মেঘের আনাগোনা। বড়ো বড়ো জলাশয় গুলোতে দেখা মেলে পদ্ম ফুলের বাহার। আকাশ বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে দেবীর আগমন বার্তা। সবাই যেন জেগে ওঠে নতুন সাজে। তেমন ভাবেই সেজে ওঠে পত্র পত্রিকাগুলো শারদীয়া পত্রিকার আকারে। তেমন ভাবেই আমরা আমাদের পত্রিকাকে সাজিয়ে তুলেছি বিভিন্ন লেখকের লেখা দিয়ে। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।--সহঃসম্পাদক, শমিত কর্মকার, স্ব-বর্ণ। 

 

সহঃসম্পাদককের কলমে:

একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। একটা ঘূর্ণিঝড়ের মাতন  শেষ  হতে না হতেই আরেকটা, প্রবল জলোচ্ছ্বাস! কত গবাদি পশু, ক্ষেতের ফসল জলমগ্ন হয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত, দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সর্বস্ব হারিয়েও মানুষ হারায় না তার মনোবল। অদম্য আশায় বুক বেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়ে নূতন উদ্যমে নূতন আশায়। এরই নাম বোধহয় জীবন! জীবনের ঝুলি আবার পূর্ণ হয়ে ওঠে আনন্দ-উৎসবে, পাল-পার্বনে, গানে-কবিতায়। এত দুর্যোগের মধ্যেও শিউলি ফুলের হাসির সাথে রজতশুভ্র কাশের বনে সোনালী আলোর ঝলকানি বলে দেয় উৎসবের আগমন বার্তা।  পূজো এসে গেছে !এসে গেছে  নানান স্বাদের গল্প, অণুগল্প ,কবিতা, অণুকবিতায় ভরা স্ব-বর্ণ তার বৈচিত্র্যময় সম্ভারটুকু নিয়ে। সকলের জন্য শুভেচ্ছা রইলো  ভালো কাটুক,আনন্দে কাটুক উৎসব মুখর দিনগুলি।--সাবিত্রী দাস সহ-সম্পাদক, স্ব-বর্ণ।  

 

সম্পাদকীয়-- 

চলমান জীবনের নিয়ম সৃষ্টির বাঁধনে বাঁধা। সাহিত্য মানুষের সুখ-দুঃখ ভাব ভাবনা স্মৃতি স্বপ্ন সবকিছু মিলিয়ে সৃষ্ট হয়। আর এ সব কিছুর মাঝে থেকে যায় প্রকৃতির লীলাখেলা। আমাদের সাহিত্য বস্তুত আমাদের মনের পরিব্যাপ্তি, ঘটনা ক্রমের বিন্যাস, জীবনধারার আলেখ। 

আমাদের প্রকাশ, কথোপকথন, পত্রালাপ, প্রেমালাপ সবকিছুই উঠে আসতে পারে সাহিত্যের মাধ্যমে। সাহিত্য ছাড়া জীবনকে কল্পনা করা যায় না। প্রত্যেকটি মানুষের ক্রমবিন্যাসের ওপর মানসিক পরিবর্তন যেমন ঘটে থাকে তেমনি তাদের ভাবনার অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে সাহিত্য ক্রমশ  উন্নত এক সোপানে এসে দাঁড়ায়। প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যেই সাহিত্যের ছোঁয়া থেকে যায়, কারো কারো এই সাহিত্যের ভাব ভাবনা নিজেদের মনের মধ্যেই রাখা থাকে। তার প্রকাশ শুধুমাত্র সামান্য কিছু ব্যক্তিগত লেখা ও বার্তালাপের মাধ্যমে সীমাবদ্ধ থেকে যায়। এই ভাবনাগুলি আবার সাহিত্যিক লেখক কবিরা যখন সযত্নে কলমে কাগজের মাধ্যমে তুলে ধরেন তখন সে সাহিত্য লিখিত রূপ নিয়ে সর্বসমক্ষে প্রকাশিত হয়। 

সাহিত্য সৃজনের বিশেষ কিছু দিক আছে, শুধু মাত্র মনের মধ্যে ভাষার পোষণ থাকলেই সাহিত্যের বিকাশ সম্ভবপর নয়। বিকাশ বা প্রকাশ এ সবের মধ্যে দিয়েই সাহিত্যিক বা লেখক কবিরা নিজেদের পরিচিতি পান। বিশ্বসাহিত্যে যেমন অগণিত ভাষার প্রকাশ, তেমনি আমাদের ভারতীয় ভাষা সাহিত্যের মধ্যে বাংলা সাহিত্যের দৃষ্টি মূল্যায়নে এর স্থান অনেকটাই ঊর্ধ্বে। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস প্রাচীনতম ইতিহাস। এই বাংলাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখে গেছেন তাঁর অজস্র সহস্ত্র ভাব প্রকাশ। বিশ্বকবির সূত্র ধরে বাংলা ভাষা সমস্ত পৃথিবীতে  স্মরণীয়-বরণীয়। এ দিক দিয়ে আমরা বাংলা ভাষাকে নিয়ে গর্ব করার অবকাশ পাই। বর্তমান সাহিত্যচর্চা কেবলমাত্র কাগজে কলমেই থেমে নেই--এক অন্তর্জাল বিশ্বপরিমণ্ডলে তা ব্যাপ্ত ও সৃজিত। আজকাল অনায়াসেই আমরা আমাদের নিজেদের মনোভাব, পরস্পর ভাবনার বিনিময় অন্তর্জাল পরিবেশে চালিয়ে যেতে পারি। আজ আর  চিঠি লিখে সময়ের কালক্ষেপ করতে হয় না, মুহূর্তে দুরভাষ আমাদের দর্শন ও বক্তব্যকে সর্বসমক্ষে পৌঁছে দিতে পারে।

প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে সাহিত্যের ছোঁয়া লাগা থাকে। সবার মধ্যেই ভাবনার স্বয়ংক্রিয় শারীরিক ও মানসিক অবলম্বন রাখা থাকে, জীবনের কিছু কিছু মুহূর্ত সবাই কবি হয়ে যেতে পারে। ভাব ভাবনা প্রকাশের মাধ্যমে চাইলে সে নিজেকে সাহিত্যিক হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারে। তবে সাহিত্য বস্তুত মনের খোরাক, এখানে অর্থ ভাবনাকে ঢুকিয়ে দেওয়া যায় না। এখানে মানসিক তৃপ্তি কথাটাই বড় কথা। সাহিত্যিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার একটা মানসিকতা মনের মধ্যে সর্বদা কাজ করে কিন্তু সবাই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। এ জন্য ধৈর্য ও অনুশীলন বিশেষ প্রয়োজন।

যাই হোক, এবার আমাদের নিজস্ব সাহিত্যচর্চায় ফিরে আসি। আমাদের সাহিত্য চর্চা সীমিত, আমরা অনেকে সাহিত্য চর্চায় মনোনিবেশ করার চেষ্টা করি। অনেকটা সময় কাটাবার জন্য অনেকে সাহিত্যিক হতে চান। পারপার্শ্বিক দুঃখকষ্টকে ভুলে থাকার জন্যেও অনেকে সাহিত্যকে দিনচর্চার বিষয় বলে ভেবে নেন।  

আমাদের বর্তমান ব্লগ ও ই-পত্রিকা, স্ব-বর্ণ শারদীয়া সংখ্যা হিসাবে প্রকাশিত হচ্ছে। আমাদের নিয়মিত প্রকাশিত পত্রিকা স্বরধ্বনি ও বর্ণালোকের এটি একটি মিলিত সংস্করণ বলা যেতে পারে। বর্তমান সংখ্যায় কবিতা ও গল্প দুটিই স্থান পেয়েছে। লেখা প্রকাশের ব্যাপারে বলে রাখি --আমাদের পত্রিকায় লেখার বা লেখকের গুন মানের ভিত্তিতে আগে পরে পোস্টিংয়ের কিছু ব্যাপার নেই। বরং লেখা পাঠাবার তারিখের ভিত্তিতে আগে পরের পোস্টিং সিস্টেম কাজে লাগানো হয়েছে। 

সর্বোপরি আমাদের ত্রূটি বিচ্যুতির অভাব নেই জানি। আর এ জন্যেই সমস্ত লেখক পাঠকদের কাছে আমাদের অনুরোধ, আপনারা আমাদের পত্রিকা পড়ুন। আপনাদের নিজস্ব মতামত ও নিরপেক্ষ দিকদর্শনে আমরা বিশেষ আগ্রহী। ধন্যবাদান্তে--তাপসকিরণ রায়, সম্পাদক, স্ব-বর্ণ।   

 

সহঃসম্পাদককের কলমে:

প্রতি বছরের মত আবার একটা নতুন শারদবর্ষ এসে হাজির। এর আগমন বার্তা ধ্বনি তো হয় আকাশে বাতাসে অনেক আগে থেকেই। পথ চলতে চলতে মাঠে ঘটে তাকালেই চোখে পরে যায় রাশি রাশি কাশ ফুলের মেলা। আকাশের দিকে তাকালেই দেখা মেলে নীল আকাশের নিচে সাদা পেজা তুলোর মত স্তুপ মেঘের আনাগোনা। বড়ো বড়ো জলাশয় গুলোতে দেখা মেলে পদ্ম ফুলের বাহার। আকাশ বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে দেবীর আগমন বার্তা। সবাই যেন জেগে ওঠে নতুন সাজে। তেমন ভাবেই সেজে ওঠে পত্র পত্রিকাগুলো শারদীয়া পত্রিকার আকারে। তেমন ভাবেই আমরা আমাদের পত্রিকাকে সাজিয়ে তুলেছি বিভিন্ন লেখকের লেখা দিয়ে। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।--সহঃসম্পাদক, শমিত কর্মকার, স্ব-বর্ণ। 

 

সহঃসম্পাদককের কলমে:

একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। একটা ঘূর্ণিঝড়ের মাতন  শেষ  হতে না হতেই আরেকটা, প্রবল জলোচ্ছ্বাস! কত গবাদি পশু, ক্ষেতের ফসল জলমগ্ন হয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত, দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সর্বস্ব হারিয়েও মানুষ হারায় না তার মনোবল। অদম্য আশায় বুক বেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়ে নূতন উদ্যমে নূতন আশায়। এরই নাম বোধহয় জীবন! জীবনের ঝুলি আবার পূর্ণ হয়ে ওঠে আনন্দ-উৎসবে, পাল-পার্বনে, গানে-কবিতায়। এত দুর্যোগের মধ্যেও শিউলি ফুলের হাসির সাথে রজতশুভ্র কাশের বনে সোনালী আলোর ঝলকানি বলে দেয় উৎসবের আগমন বার্তা।  পূজো এসে গেছে !এসে গেছে  নানান স্বাদের গল্প, অণুগল্প ,কবিতা, অণুকবিতায় ভরা স্ব-বর্ণ তার বৈচিত্র্যময় সম্ভারটুকু নিয়ে। সকলের জন্য শুভেচ্ছা রইলো  ভালো কাটুক,আনন্দে কাটুক উৎসব মুখর দিনগুলি।--সাবিত্রী দাস সহ-সম্পাদক, স্ব-বর্ণ।  

কৌশিক গাঙ্গুলীর এক গুচ্ছ কবিতা-- ১ #বেঁচে_আছি_ভালোবাসায়_যন্ত্রণায় ২ "কালবৈশাখী " ৩ আলো ৪ "তির্যক "



কৌশিক গাঙ্গুলীর এক গুচ্ছ কবিতা-- 

#বেঁচে_আছি_ভালোবাসায়_যন্ত্রণায়

-----------------------------------

বসে থাকা এই বিষন্ন দুপুরে

তোমার চোখের জলের লেখা

যে চিঠি খানি পেলাম

তাতে হৃদয় উপচানো

যন্ত্রণার ভালোবাসা বহে যাচ্ছে

সারা অন্তর জুড়ে।

 

দেখো ওই কাশফুলের জঙ্গলের

মাঝে  আমি শুয়ে আছি।

তবু আকাশের মেঘ

তোমার যে চিঠি খানি আমাকে দিল

তার মধ্যে মিষ্টি একটা সুর ভেসে আছে।

বলছে আমরা বেঁচে আছি ভালোবাসায়,যন্ত্রণায়।

 

"কালবৈশাখী " 

 

সারা দুনিয়াজুড়ে বাড়ে দুর্নীতি আর সন্ত্রাস , 

বিষন্ন ও নিরন্ন মানুষের বুকে নিষ্ঠুর পরিহাস ! 

বয়স মানেনা ধর্ষকদের ইতিহাস বিকৃতির সঙ্গে নেশার সহবাস

 শিল্পায়নে বন্ধ হয় চাষাবাদ ধর্মের নামে বাড়ে মৌলবাদ 

হিংস্রতার আগুনে পোড়ে বাড়ি অভাবেতে ফাঁকা ভাতের হাড়ি 

অহংকার আর ক্ষমতার আস্ফালন দেখা যায় , 

যে বসে সিংহাসনে সেই রাবণ হয় –

হুজুগের ফুর্তিতে মাতে জনগণ , 

নোংরা রাজনীতিতে বেপরোয়া দুঃশাসন ,

প্রতিবাদ মানে তো লাশ হতে চাওয়া –

এইভাবেই বসবাস আসুক গরম হাওয়া 

যদি হয় কেউ হোক দুখী

তবু আসুক কালবৈশাখী।

 

আলো

 

ধর্মের অন্ধকার দখল করে দেশ

মনের অন্ধকার প্রতারক বানায় মানুষকে।

এই অসময় বিষন্ন মুখে হাসি আসে না

যদি এই ভাঙাচোরা জীবনটাকে একটু গুছিয়ে নিতে পারতাম তাহলে চাঁদের মতন একটা বৃত্ত আঁকতাম।

দেখতে তার মধ্যে কলঙ্ক রেখা নেই,

আছে শুধু রক্ত রেখা ।

টাকা ছাড়া নাকি ভালবাসা শুধুই বোকামি?

তাতে শুধুই যন্ত্রনা থাকে আর সরলতা পাগলা গারদে ও আদর্শ নির্বাসনে।

তবু ব্যাকুল হওয়া কবির কলম স্বপ্নের কথা বলে শব্দের অক্ষরে।

গোলাপের গন্ধ নয় আমার পৃথিবীর চারপাশে গরম ভাতের গন্ধ ম..ম.. করে

জনি অশুভশক্তির জয়জয়কারে

কোণঠাসা করে বোকা ভালো মানুষ দের,

তবুও এই হেরে যাওয়ার মধ্যেও মনুষ্যত্ব হারিয়ে যায় না, বিবেক হারিয়ে যায় না।

একটা আলো-অন্ধকারে জ্বলে থাকে...

একটা আলো-অন্ধকারে জ্বলে থাকে।

 

"তির্যক " 

 

(ক) সুন্দরীর ছবি আর দীর্ণ কাব্য ফেসবুকে হিট । 

(খ) নেতাদের মতন সত্য বলতে শিখে গেছি । 

(গ) শিক্ষক নয় সিনেমার নায়কেরা আদর্শ । 

(ঘ) কখনও রাজনীতির নামে , কখনও ধর্মের আড়ালে খুন হতেই থাকে । 

(ঙ) মানুষের সদিচ্ছা কেড়ে নেয় তার দুর্ভাগ্য । 

(চ) পরিবেশ আর পরিস্হিতি ভগবানকে শয়তান করে । 

(ছ) পতনের আগে সবার অহংকার বেড়ে যায় । 

(জ) আইন কি আইনের পথে চলে না বেপথে ? 

(ঝ) লোভ মানুষকে বাঁচায় ও নীচে নামায় । 

(ঞ) প্রতিশ্রুতি দেওয়াটাই তেনাদের কাজ , রাখা নয় ।

 

তৈমুর খানের এক গুচ্ছ কবিতা-- প্রেমিকের ডায়েরি--এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ, ছয়, সাত


তৈমুর খানের এক গুচ্ছ কবিতা-- 

 

প্রেমিকের ডায়েরি

 

  এক দুই তিন চার পাঁচ ছয় সাত

 

 চশমাটা খুলে আমি দাঁড়ালাম

 চারিদিকে বিষাদ বিষাদ

 সভ্যতার আলো নিভে গেছে

 দরজা-জানালায় মৃত অন্ধকার

 মুখ বাড়িয়ে দিয়েছে

 কার সঙ্গে কথা বলব তবে?

 হৃদয় চলে গেছে বহুদূর

 হৃদয় এখন বিবাহিতা

 পাষাণের ঘরে সে এখন পেতেছে সংসার

 

 তাদেরই সন্তান সন্ততি নিষ্ঠুর নিষ্ঠুর

 

 দুই

 

বিড়ম্বনা আমারই অতিথি

নিয়তিকে সঙ্গে নিয়ে বারবার আসে

ধ্বস্ত বিধ্বস্ত করে আমার নিজস্ব আশ্বাসগুলি

বিভ্রান্ত এসে রোজ পরামর্শ দেয়

আবেগের যানে চড়ে আত্মহত্যার কাছে যাই

 

 ঘুরে দাঁড়াব আমি তবে কার অপেক্ষায়?

 

 

 তিন

 

 দু-একটি নতুন মুখ চাঁদের মতন উদিত হলে

 মেরামত করতে থাকি আবার নিজেকে

 অশ্রুস্রোত বয়ে গেছে ক্ষরণের কালে

 এখন শুধু নৌকা বানাই

 আবার ভাসাব নিজেকে নোনা জলে

 

 কষ্টের সমুদ্র শুধু

 ভাসুক ভাসুক এ জীবন

 আবার যদি হাওয়া ওঠে

 আবার যদি ফিরে আসে গান!

 

  চার

 

 বাঁচার ভেতর এত মৃত্যু বেঁচে থাকে

 এত দাহ অগ্নিযাপন!

 তবুও কোথাও হিমঘর আছে

 নিস্তব্ধ নির্বাক রাতে চুপি চুপি যাই

 গোপন কোনও সঙ্গমের কাছে।

 

 বাইরে ভ্রমর ওড়ে, পায়রা ডাকে

 কালো বেড়াল লাফায়

 দরজা ভেঙে ঢুকে পড়ে ডাকাত অন্ধকার।

 

 

 পাঁচ

 

 সাফল্য সব বিক্রি হয়ে গেছে

 খুব সুন্দর সাফল্যগুলি।

 এখন ফাঁকা হাটে বেগানা বিষাদগুলি

 ফেরে জাবর কেটে।

 শব্দ ছাড়া আর কিছু নেই

 শব্দই এখন নৈঃশব্দ্যের পাখি

 বাসা বোনে অলীক খড়কুটোতে

 বাসায় শুধু ঝরা পালকগুলি

 ওড়ার স্বপ্ন দ্যাখে।

 

ছয়

 

ছোঁয়ার ভেতর অনেক প্রাচীন ছোঁয়া

 ভিড় করে সব আসতে থাকে

 তীব্র ব্যাকুলতায় ইচ্ছেগুলি ছড়িয়ে দেয়

 আসক্তির প্রবল অন্ধকারে কাঁপতে থাকি

 

 ছোঁয়াগুলি নিজস্ব সব ছোঁয়া

 রাতজাগা মুখ ক্লান্ত দুর্বিষহা

 একাকিত্বে ঘর ভরে যায়

 আমিও দিশেহারা!

 

সাত

 

 রোজ এই কুয়োর ধারে

 জল তুলি আর আরোগ্যস্নান চাই

 আমার বিষাদ বাগানজুড়ে

 আবার যদি ফুল ফোটে

 জ্যোৎস্না আলো দ্যায়!

 

 আবার যদি সাতজনমের পরি

 এই অনন্তের সীমান্ত জোড়া ঠোঁটে

 একটি চুমু খায়!

 প্রেমিক আমি  শেষ ঘোষণায়

 বলে যেতে চাই।

 

 

 💚💚💚

 তৈমুর খান 

পরিচিতি :  জন্ম ২৮ জানুয়ারি ১৯৬৭, বীরভূম জেলার রামপুরহাট ব্লকের পানিসাইল গ্রামে। 

পিতা ও মাতা :জিকির খান ও নাওরাতুন। 

পড়াশোনা :বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে মাস্টার ডিগ্রি এবং প্রেমেন্দ্র মিত্রের কবিতা নিয়ে পি এইচ ডি প্রাপ্তি। 

পেশা :  উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহ শিক্ষক । প্রকাশিত কাব্য :   কোথায় পা রাখি (১৯৯৪), বৃষ্টিতরু (১৯৯৯), খা শূন্য আমাকে খা (২০০৩), আয়নার ভেতর তু যন্ত্রণা (২০০৪), বিষাদের লেখা কবিতা (২০০৪), একটা সাপ আর কুয়াশার সংলাপ (২০০৭), জ্বরের তাঁবুর নীচে বসন্তের ডাকঘর (২০০৮), প্রত্নচরিত (২০১১) ইত্যাদি। 

 

পুরস্কার :  কবিরুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার ও দৌড় সাহিত্য সম্মান। 

 

ঠিকানা : রামরামপুর (শান্তিপাড়া), রামপুরহাট, বীরভূম, পিন ৭৩১২২৪, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত। ফোন ৯৩৩২৯৯১২৫০

 

কৌস্তুভ দে সরকারের কবিতা-- জাদু

কৌস্তুভ দে সরকারের কবিতা-- 

 

জাদু

 

ভালোবাসা অত সস্তা না হলেও

ভালোবেসে ফেলা নিতান্তই সহজ আমার কাছে !

আমার ভেতরে সেই জাদুদণ্ড আছে।

 

খোলা-চুলে উড়ুউড়ু মন দেখে বুঝে ফেলি

চোখের পুকুরে কার কিরকম টোপ ফেললে

স্বপ্নরঙিন মাছ উঠে আসবে, 

বুঝে ফেলি কিরকম মাছরাঙা হতে হবে

শান বাঁধানো পুকুরের পাড়ে, ঠায় বসে

কোন কল্পনার জলে ভাসিয়ে দিতে হবে দিন রাত

 

সহজেই আমি ভালোবেসে ফেলি তাদের

যারা আমাকে সহজেই ভুলে থাকতে চায়।

তারা কথা না বললেও আমি তাদের সঙ্গে বলি,

অনর্গল একটা মাঞ্জা দেওয়া ঘুড়ি 

প্রেমের বাতাসে দোল খায়

আমার হাতেই থাকে সেই জাদুর লাটাই।

 

ভালোবেসে ফেলা নিতান্তই সহজ আমার কাছে !

কেননা, অতটা জটিল যেহেতু নই

অত আগে পিছে ভাববার সময় কোথায়।

বিস্মিত হই তবু তোমাদের দেখে

যতবার ভালোবেসে কাছে টেনে নিয়ে বসি 

পাশের চেয়ার

তোমরা ক্রমশই দূরে আড্ডা সরাও।

 

আমিও সরে সরে যাই—

কেননা

রাষ্ট্র বা ক্ষমতার কাছে হার মানা সহজ না হলেও

মন ও ভালোবাসার কাছে

আমি সহজেই হার মেনে যেতে পারি

চোখে চোখ রেখে মেখে নিতে পারি আতর-চন্দন,

উদাসীন অবহেলা সয়ে সয়ে

ভালোবাসা অত সস্তা না হলেও

ভালোবেসে ফেলা নিতান্তই সহজ আমার কাছে !

আমার ভেতরে সেই জাদুদণ্ড আছে।

 

সম্পাদকীয়--

সম্পাদকীয়--   চলমান জীবনের নিয়ম সৃষ্টির বাঁধনে বাঁধা। সাহিত্য মানুষের সুখ-দুঃখ ভাব ভাবনা স্মৃতি স্বপ্ন সবকিছু মিলিয়ে সৃষ্ট হয়। আর এ সব কি...